Thursday, February 24, 2022

 

রৌদ্রস্নাত বৃষ্টি
হাকিকুর রহমান 
 
একদিন হঠাৎ ইচ্ছে হয়েছিলো, রৌদ্রস্নাত বৃষ্টিতে ভেজাবো নিজের মুখখানা,
আকাশ, নদী, পাহাড়, সমুদ্রকে স্বাক্ষী রেখে হেঁটে যাবো,
গাঁয়ের পথটা ধরে আরেকবার।
মেঘ, পাখি, বকুল, অরণ্যকে সাথী করে নেবক্ষণ।
একটা জাদুছড়ি হাতে নিয়ে, কইবো, মাথাটা ঘোরাও
একবার ঘোরাও দেখি- আঁখি মেলে দেখি, কেমন সুখে আছো তোমরা।
কোন পরদেশ হ’তে অতি প্রত্যুষে, উড়ে এলো বাহারী একটা প্রজাপতি,
সাথে করে নিয়ে এলো অরুণ রবিকে। দু’জনার মাঝে বড়ই ভাব।
ওদিকে আবার বনের ধারে ঘুমিয়ে পড়া লজ্জাবতীটাও আড়ামোড়া ছেড়ে
জেগে ওঠে, কাক ভেঁজা বৃষ্টিকে সাথে নিয়ে।
জন্মান্তরের চেনা সরু নদীটার পানে ফিরে চাই, অতি পরিচিত
শালের বনের ধার দিয়ে একটু হাঁটি,
শেফালী, কলমিলতা, ইউক্যালিপ্টাস, মেহগনি প্রশান্তি জাগায় দেহমনে,
কি সে এক প্রশান্তি! কোন সে অচিন গাঁয়ের সুন্দরী বঁধু এসছে কাঁখে লয়ে
গাগরী। গান গেয়ে গেয়ে ভরে নিয়ে যাবে জল, উনুনে চড়াবে নানাবিধ খাদ্যাদি।
পদ্মপাতা হতে এক ফোঁটা জল যবে টস্ করে পড়লো দীঘির জলে,
তড়াস করে জেগে উঠলো কুয়োর ধারের কুনো ব্যাঙটা
এই বৃষ্টিতে সেও একটু ভিজে নেবে ঘটা করে, ওদিকে পাকুড় গাছের শাখে বসে
শিস্ দিয়ে যায় নীলকন্ঠী। মরা গাঙের জলে আয়নার মতো প্রতিচ্ছবি পড়েছিলো
পাশে নুয়ে পড়া অশথের। তবে সেটা নড়ে চড়ে অদৃশ্য হলো,
বৃষ্টির ফোঁটাগুলো পড়ে।
আমিও ভরা ফাগুনের রাঙানো অধ্যায়ে অন্তহীন হাঁটলাম,
যতই হাঁটি, আজন্ম পরিচিত নদীটাও হাঁটে সাথী হয়ে।
আগেই বলেছি, আরও অনেকগুলো সাথী জুটে যায়।
ও! বলা হয়নি এখনও। ধানের ক্ষেত, শরষের হলুদ ফুল, সাথী হতে চেয়েছিলো।
হ্যা, আমি তৎক্ষনাৎ রাজি হয়েছি, আর অপেক্ষা করেছিলাম,
এক পশলা ঝরো ঝরো বৃষ্টির। ঠিকই সে কথা রেখেছিলো,
আমার আঁখির পাতাদুটো ধুঁয়ে দিতে।

No comments:

Post a Comment