Sunday, January 26, 2020

Good morning
Hakikur Rahman

A single light came on the face
New hope arose again in the chest.
Whole sky is full of different colors
The wind was blowing in a new way.
The dawn bird swings in the branches
Little girl wake up with a smile.
What a jolt of life it seemed
My heart fell delighted.
নতুন দিন
হাকিকুর রহমান

একোন আলো লাগলো এসে মুখে,
তন্দ্রাগুলো হারিয়ে গেলো-
জাগলো আশা বুকে।।
উঠলো জেগে ঝলমলানো দিন,
ভাবের তরী উদয় হলো-
মন হলো রঙিন।
প্রাণে প্রাণে উঠলো জেগে আশা,
নতুন দিনের আগমনে-
আবার তরী ভাসা।
গানে গানে ভরলো সারা মাঠ,
ভরা নদীর ছলছলিতে-
সরব হলো ঘাট।
ইলিম-পিলিম
হাকিকুর রহমান

ইলিম-পিলিম, পানের সিলিম
সিলিম গেলো কই?
মাঁচার নীচে, খাটির নীচে
খাড়াও দেইখ্যা লই।
খয়ের, জর্দা, চুন, সুপারি
ঠিক আছেনি বউ?
বানাই খামু মিষ্টি পান
সাথে দিয়া মউ।
ফোকলা দাঁতের খোকলা হাসি
সুবাস ভরা মুখে,
পানের দোক্তা হাতে নিয়ে
বেড়ান মনের সুখে।
দাঁতগুলো সব গেলো পড়ে
হামান-দিস্তা লাগে,
লাঠি নিয়ে দাদি বুড়ি
হাঁটেন সবার আগে।
উপলব্ধি
হাকিকুর রহমান

আবেগতাড়িত হয়ে, রহিলাম বসে
হৃদয়ের যত না বলা কথাগুলিকে সাথে লয়ে।
ধরিতে চেয়েছিনু চাঁদ, কোন সে পলকে
লক্ষ্যচ্যুত হয়ে, মনে হয় যেন রাত জাগানিয়া ফাঁদ।
গুনিতে চেয়েছিনু তারা, ওদের ব্যাপ্তিতে চমকিত চোখে
চেয়ে থাকাই হলো সারা।
নামিতে চেয়েছিনু জলে, সাঁতার না জেনে কোন সে অভিপ্রায়ে
টালমাটাল হলেম গভীর অতলে।
গাহিতে চেয়েছিনু গান, স্বরলিপি তার বুঝিতে না পেরে
আজি এপ্রহরে, বিস্মিত হয়ে, আলোড়িত হলো মন-প্রাণ।
বিশ্বজননী
হাকিকুর রহমান

ওহে লাঞ্ছিতা বিশ্বজননী
দিয়েছো আঁচল পেতে,
আমি হেথা বসে করিছি ধ্বংস
মত্ত খেলায় মেতে।
তোমার মমতা ছড়ায়ে দিয়েছো
সবুজের সমারোহে,
আমি তাতে বসে লাগাই অনল
কিবা অবুঝের দ্রোহে।
নিখিল বিশ্ব চাহিয়া রয়েছে
সকলেই বোবা যেন,
তব স্বস্তিতে মোদের স্বস্তি
বুঝিনা মোরা কেন।
ক্ষমিয় মোদেরে অবুঝ মোরা
জগৎ মাতা তুমি,
আর জেনেশুনে ভুল করিবোনা
চরণ তোমার চুমি।
পান্থ পাখি
হাকিকুর রহমান

পান্থ পাখির পাখায় পাখায়
বিচরণ করা এই পৃথিবীকে,
অবসন্নতায় ভরা গতিপথ
জীবনের মানে হয় ফিকে।
প্রহরের বেড়াজাল ছিন্ন করে
অগ্রসরমান হই এই পথে,
হাস্য-উপহাস প্রকাশিয়া
ব্যর্থতা ঢাকি কোন মতে।
কিসের পরিশুদ্ধতায়
ত্রয়ীত হলো দেহমন,
প্রকাশিতে নাহি পারি
অপরিকল্পিত প্রাণায়ন।
যাচ্‌ঞা
হাকিকুর রহমান

চরণে সপিয়া দিয়াছি, হে প্রভু
করোহে মোরে পরিত্রাণ,
হৃদয়ে গাঁথিয়া রেখেছি তোমারে
তুমি মহা মহীয়ান।
দ্যুলোক, ভূলোক, ত্রিলোক ব্যাপিয়া
করোহে তুমি রাজ,
অবিনশ্বর তুমি, করেছো সৃষ্টি এই ধরাকে
হেরি তব কারুকাজ।
স্মরণে রাখিয়া তোমারই কথা
চলি আমি পদে পদে,
আমিতো অতি ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র
রক্ষা করোহে মোর বিপদে।
কিহে?
হাকিকুর রহমান

তুমি এসে গায়ে পড়ে
সৎ উপদেশ দাও
আগে তুমি সোজা পথে
নিজের পা বাড়াও।
সত্যের পথ, কঠিন বটে
মিথ্যার পথ জটিল
সত্যের নাও, ভিড়বে আগে
মিথ্যায় যতো কুটিল।
সত্য পথে চলতে হবে
নইলে উপায় নাই
ওপারেতে বিচার হবে
যতোই বলো তাই।
আবহমান
হাকিকুর রহমান

ধুন ধরেছে কাঠবেড়ালী
ভেংচি মারার তরে,
ঘাপটি মারা নেংটি ইঁদুর
অমনি কেটে পড়ে।
তাইনা দেখে হুলোবেড়াল
দিলো বেদম দোড়,
কুকুর মশায় তেড়ে আসেন
ছেড়ে আড়ামোড়।
জাল ফেলেছে মাকড়সাটি
আট পা ষোল হাঁটু,
কানে মশার ভনভনানি
সেইতো কানাই লাঠু।
একপা তুলে কানাবগী
খাচ্ছে চুনোপুঁটি,
তাইনা দেখে খুকুমনি
হেসেই কুটিকুটি।

Saturday, January 25, 2020

শ্বাস্বত
হাকিকুর রহমান

একি অপরূপ রূপ, হেরিনু তোমার
জননী জন্মভূমি-
জুড়ালো পরাণ, গাহি তার গান
চির শ্বাস্বত তুমি।।
ভাসিছে মেঘের ভেলা,
গগনে করিছে খেলা,
কাটিলো সারা বেলা।
নদী বহে কুলুকুল,
কিযে মনোহর দু'কুল,
শাখাতে ফুটেছে বকুল।
মাঠে সোনারং ধান,
রাঁখাল গাহিছে গান,
জুড়ালোযে মন-প্রাণ।

অতিথি
হাকিকুর রহমান

দুয়ারে দাঁড়ানো অতিথি
দাওগো পিড়িটা পেতে,
যাকিছু আছে প্রস্তুত
দাওনা তাহারে খেতে।
দেখে মনে হয়, বহুদিন হলো
খায়নিকো কিছু ভালো-মন্দ,
কি সকরুণ, দৃষ্টিতে চায়
মনেতে যেনো নেই কোন আনন্দ।
হৃদয় গভীরে দাগ কেটে যায়
দেখে তার বিষন্ন মুখ,
চেষ্টা করিতে ক্ষতি কি আছে
পায় যেনো সে কিছু সুখ।
সুপ্রভাত
হাকিকুর রহমান

আবির রাঙানো সূর্যটা জাগিলো
পূবের আকাশে,
একোন প্রাণের পরশ লাগিলো
ভোরের বাতাসে।
চারিদিকে হেরি মনখোলা হাসি
হলুদের সমারহ,
ধানের মাঠেতে ঢেউ খেলে যায়
একোন আবহ।
পাখির কাকলী ভরালো ক্ষণকে
ফুটে কত ফুল কাননে,
দিনের শুরুকে হাতছানি দিয়ে
পেজা মেঘ ভাসে গগনে।
বিবাগী এ মন আলোড়িত হলো
হেরিয়া নতুন ঐ রবি,
হেরিলাম এই নয়নাভিরাম রূপ
পটে আঁকা এক ছবি।

কাজের লোক!
হাকিকুর রহমান

কাজের কথা বল্লে পরেই
আড়ামোড়া ছাড়ে,
নানান রকম ফন্দি-ফিকির
চালাকিটা বাড়ে।
আলসেমিতে বড়ই পটু
কাজে-কম্মে ফাঁকি,
ঘুম থেকেতো উঠবেনা সে
যতোই ডাকা-ডাকি।
যতোই বলো কাজের কথা
করবেনাতো শুরু,
লজ্জা-শরম নেইযেগো তার
চামড়াটাতো পুরু।
ছলা-কলা করেই যে তার
জীবন গেলো কেটে,
চল্লো সেতো সারাটা কাল
নিজের বুদ্ধি এঁটে।

Tuesday, January 14, 2020

Summon
Hakikur Rahman

Who shows up to me
That light of fountain
I'm uplifted, I'm delighted
I'm enchanted.
Who is listening?
That upcoming word
All my decrepitude just goes away
All the dirt of mind goes away.
Awake!
Here comes the inspiration for survival
My heart is now full
The consciousness is new again.
You have ignited the light now
Someone with a light of hope
Forwarding the legs to the front again
Feels great!
জলধারা
হাকিকুর রহমান

জলধারা হাসি কহে
ওহে মেঘরাশি,
তুমিতো হতচ্ছাড়া
হয়ে গেছো বাসি।
কোথা গেলো তোড়জোড়
কোথা কলরব,
গগনের কোনে বসি
কিসের অনুভব।
এদিকে চাহিয়া দেখো
আমারি পানে,
সকলে ডুবিয়া রহে
মনেরি টানে।
মেঘরাশি কহি উঠে
ওহে জলধারা,
আমি বিনা তুমিযে
অতি হতচ্ছাড়া।
চলাচল
হাকিকুর রহমান

জুতো জোড়া হাতে নিয়ে
হাঁটেন দাদু বুড়ো,
ছাতা খানা সঙ্গে নিয়ে
চলেন সাথে খুড়ো।
পথের মাঝে গর্ত খানা
বেজায় ছিলো মস্ত,
লম্ফ দিয়ে পার হতে
প্রাণটা গেলো অস্ত।
কাদা পানি দিয়েই বুঝি
রাস্তা খানি গড়া,
পড়ো যদি প্যাকের মাঝে
বন্ধ নড়া চড়া।
করার কিছু নেইকো বাপু
এমনি করেই চলা,
মোড়ল বাবু রাস্তা বানান
তাতেও ছলা কলা।
 
দুখু মিয়া
হাকিকুর রহমান

নির্বাক চোখে রহিবেকি চেয়ে
কহিবেনা আর কোন কথা,
ছিলোতো অনেক কিছুরই বলার
রহিলো তা যথা তথা।।
যেই হাতে ধরেছিলে অসি,
সেই হাতে ধরেছিলে মসি-
চেতনাগুলিকে উজ্জ্বীবিত করে
ভেঙ্গেছিলে নীরবতা।
কালের গর্ভে ফিরে,
কুনুর নদের তীরে-
এসেছিলে ওহে দুখু মিয়া
জাগালে বিবেকের স্বাধীনতা।
ছিলো, আঁধার ঘেরা রাত্রি,
তুমি, হয়েছিলে সহযাত্রী-
আলোক দেখিয়ে অভাগা বাঙালীরে
দিয়েছিলে মানবতা।
চির ভাস্বর রহো ওহে,
জেগে রই সেই মোহে-
জ্ঞানের আলোর পরিধি বাড়ালো
তোমার ঐ কথকতা।
এসেছিলে জৈষ্ঠের ঝড়ে,
বিদায় নিয়েছো ভাদরে-
সৃষ্টিশীলতার তেইশ বছরে
এনেছিলে নবীনতা।
অপেক্ষা
হাকিকুর রহমান

ছাড়িয়া গোত্র, কাড়িয়া মিত্র
বিমূর্ত ধরাতলে
করি বিভক্তি, ছাড়ি আসক্তি
চেতনার বেড়াজালে।
কহি ব্যঞ্জনা, সহি গঞ্জনা
ত্রিমুখী যাতনায়
মাপি নিক্তিতে, চাপি উক্তিতে
গতস্য শোচনায়।
কাহারে বলি, কোন পথে চলি
খুঁজিয়া পাইনা দিশা
আঁধারের কোলে, দিবা গেলো ঢলে
ঢাকে ঘন অমানিশা।
নিষ্কৃতি করি, বিবৃতি ধরি
চলমান রহি বটে
সমীক্ষায় সহি, অপেক্ষায় রহি
তটিনীর ঘোলা তটে।
আবহ
হাকিকুর রহমান

গগনে উঠিলো আঁধো বাঁকাচাঁদ
জাগিলো অগনিত তারা,
আলো আঁধারির খেলা ছড়িয়ে
বহিলো শ্বাস্বত ধারা।
মৃদু সমীরণ বহিলো কাননে
লাগিলো প্রাণেতে দোলা,
মরমিয়া উঠে হৃদয় আঙ্গিনা
তাহাতো যায়না ভোলা।
দখীনা বায়ের সুনিবিড় পরশ
পশিলো পরাণে মোর,
বাঁশ বাগানের ছায়াতে জোনাকি
খুলিলোযে আঁখি ডোর।
ভ্রমন
হাকিকুর রহমান

হালুয়াঘাটের হালুয়া খেয়ে
গেলাম বাকেরগঞ্জ,
বাকরখানি খেয়ে তবে
এলাম নারায়নগঞ্জ।
শীতলক্ষ্যার পাড়ে বসে
ভাবি গৌরীপুর,
গৌরীপুরের মৌরি খেয়ে
মনটা ভরপুর।
এরপরেতে গেলাম আমি
কায়েতটুলির মাঠে,
বকশিবাজার, নারিন্দাতে
সারাটাদিন কাটে।
কুমারখালী, মধুখালীর
বাজার জমজমাট,
তারপরেতে গেলাম আমি
বাহাদুরাবাদ ঘাট।
নাটোর যাবার পথে
থামি দিঘাপাতিয়ায়,
কাঁচাগোল্লা খেয়ে তবে
হৃদয়টা জুড়ায়।
আবাহন
হাকিকুর রহমান

তারায় তারায় ভরিলো আকাশ
মৃদু বহে সমীরণ,
আঁধারের মাঝে জ্বলে জোনাকি
আলোড়িত তনু-মন।।
চাঁদের আশায় থাকি
কোন সুরে কারে ডাকি,
হাসনুহেনার মধুর সুবাসে
ভরে থাকে বাতায়ন।
বেলাযে পচিমে ঢলে
আলো-আঁধারির খেলা চলে,
আকাশে চলিছে মেঘের খেলা
কাটে কাল অনুক্ষণ।
দিবস রজনীতে ঢাঁকে
সীমানার ওপারে ডাকে,
তৃষিত প্রাণেতে লাগিলোযে দোলা
নবতর আবাহন।
স্মৃতির কাহন
হাকিকুর রহমান

বিরহ কাঁদিয়া গেলো ফিরে,
মম হৃদয়ের উঠানেতে দাঁড়ায়ে,
বুঝিতে পারিনিকো তার অস্ফুট ক্রন্দন,
সম্বিত ফিরিলো যখন, তখন হয়ে গেছে অনেক দেরী।
কিনারে ভিড়িলো গাড়ী, শেষ ভেঁপু দিলো ছাড়িবার-
না শুনিতে পারি তাহা,
রহিলাম পড়ি অনতিক্রান্ত প্রান্তরে,
মনে হয় অপেক্ষমাণ অনাদিকালের তরে।
কেহকি দেখেছো?
ঐ যে ফুটেছিলো ছোট্ট এক অপরাজিতা ফুল!
অবহেলিতই ছিলো সে, যতদিন ছিলো ফুটে।
বাহারি একটা প্রজাপতি,
কখনও কখনও বসেছে তার উপর,
কি কথা হয়েছে তাদের মাঝে, তা শুনিতে পারিনি।
চাতকী চাহে, আকাশের পানে,
"ফটিক জল" বলে গাহে-
হয়না হৃদয়াঙ্গম এখন আর,
কারণ বাঁধা পড়ে আছি
প্রলম্বিত স্মৃতির কাহনে,
অবহেলায় ধুলা পড়ে আছে সেথায়।
সবিনয় কথন
হাকিকুর রহমান

মোর হাত দুটি ধরে নিয়ে চলো হে প্রভু,
আমি তো একা চলিতে পারিনা-
প্রভুহে, প্রভুহে।
মোর হৃদয় মাঝারে দাও সাড়া হে প্রভু,
আমি তো এভার বহিতে পারিনা-
প্রভুহে, প্রভুহে।
মোর চরণ দুটি চালিতো করো হে প্রভু,
আমি তো এপথ চিনিতে পারিনা-
প্রভুহে, প্রভুহে।
মোর স্বপ্নগুলিকে পূরণ করো হে প্রভু,
আমি তো এব্যথা সহিতে পারিনা-
প্রভুহে, প্রভুহে।
আবাহন
হাকিকুর রহমান

বেদনার নীলে করি আবাহন
ভাসি নয়নের জলে,
হৃদয়ের কথা কহিবো কাহারে
সকলিতো গেলো বিফলে।
বাঁধনের বেড়ী ছিড়িলোযে কবে
বুঝিতে পারিনি আগে,
ভাঙ্গনের তীরে বাঁধি খেলাঘর
বড় অসহায় লাগে।
কাননের ফুল ঝরিয়া পড়িছে
তুলিবার কেহ নাই,
স্মৃতিগুলি সব আলোড়িত করে
ভুলিতে পারিনা তাই।
আকাশের নীলে উড়িছে পাখিরা
যাবে কোন সীমানায়,
ছায়াঘেরা বীথি ঢাকিছে আঁধারে
ডাকে যেনো ইশারায়।
মোদ্দাকথা
হাকিকুর রহমান

মোদ্দাকথা- ব্যামো হলে বদ্দি আনো ডেকে
ঘ্যানর ঘ্যানর করোনাকো, কানের কাছে থেকে।
পেটের ব্যামো হলে পরে, খাও শাক-পাতা
কপালেতে লাগাও বাম, হলে মাথা ব্যথা।
নিত্তি খাবা সাগরকলা, হলে রক্তচাপ
প্রতি প্রাতে একটা আপেল, খেতে পারো বাপ।
ডাল দিয়ে সজনের ডাঁটা, ভালো প্রতিষেধক
উচ্ছে ভর্তায় ত্বকের ভালো, বলেন গবেষক।
সাথে তুমি সকাল সাঁঝে, একটু করো ব্যায়াম
সকল ব্যায়ামের সেরা সেযে, আছে প্রাণায়াম।
বেছে চলো সাবধানেতে, খেওনাকো ধরা
ফলমূল, শাক-সবজী, ফরমালিনে ভরা।
পুনশ্চ
হাকিকুর রহমান

গতিপ্রক্রিয়া নির্ধারণ করতঃ
পুনরায় পদক্ষেপ গ্রহণ,
আবেগের আতিশয্য আর নহে
ঘটাই নিরেট পরিশুদ্ধতার প্রতিফলন।
বিবেচ্য বিবেচনায় গন্য করিয়া
অভীষ্ট গন্তব্যের তরে প্রণিধান,
বিভ্রান্তির অতলান্ত আর নহে
আত্মশুদ্ধিকরণেই নিহিত সকল সমাধান।
সাম্যের গান
হাকিকুর রহমান

হীনমন্যতাকে পরিহার করি
বিশুদ্ধ করিয়া মন,
মানবসেবায় নিয়োজিত থাকি
স্রষ্টার প্রদত্ত পথে করি গমন।
সামনে-পিছনে আসে যত বাধা
করিয়া অতিক্রম,
গাহিতে পারি যেন সাম্যের গান
হয়না তার ব্যতিক্রম।
নির্মোহ চিত্তে করিয়া ভ্রমণ
জীবনের পরিসরে,
উদ্দীপ্ত করি একতার বাণী
ক্ষণিকের চরাচরে।
বিভ্রান্তি হতে নিবৃত রাখি
হৃদয়কে করিয়া বিনির্মান,
সেবার মানসিকতা উন্নীত রাখি
ভেদেভেদ হোক অবসান।
দিশা
হাকিকুর রহমান

তবু আপাততঃ, হনু পরাহত
দেখিয়া ভবের খেলা
দৃষ্টিতে ফিরে, অন্তরে ঘিরে
দেখে যাই সারাবেলা।
স্তম্ভিত আমি, চলি থামি থামি
জীবনের আকি বাকি
স্বস্তিতে আসা, চেতনায় ভাসা
অপলোকে চাহিয়া থাকি।
পথে হলো দেরী, তাই খুঁজে ফিরি
নিশানা হারানো পথিক
হেরিয়া দৃশ্য, অচেনা বিশ্ব
পা বাড়ানো হয়নি সঠিক।
তপ্ত ধরায়, মত্ত খরায়
হারিয়ে ফেলেছি দিশা
ফিরিয়া নিত্য, স্থবির চিত্ত
কাটেনাকো অমানিশা।
ভেজাল
হাকিকুর রহমান

পাচ্ছি যেটা, খাচ্ছি সেটা
তফাৎ বোঝার উপায় নেই
পথ্য বলি, তথ্য বলি
সবখানেতে নকল সেই।
বাছ-বিচারের বালাই নেই
ছুটছে সবাই উর্ধ্বশ্বাসে
পিছলে পড়ে কম্ম কাবার
কারও কিছু যায় বা আসে।
ফরমালিনে ভরে গেছে
যে সব খাবার নিত্তি খাই
কেমন করে দমন হবে
সেইটা দেখার কেউতো নাই।
রুগ্ন গলায় তাইতো আজি
গাইছি ফিরে দেশের গান
এসব ব্যাপার রোখার তরে
জেগে উঠুক সকল প্রাণ।
শ্রদ্ধা
হাকিকুর রহমান

তপন হাসিয়া কহে,
মম কিরণে ভুবন করি যে আলো-
তবু কেনো জানি শিশির কণাকে,
বাসিতে পারিনে ভালো।
শিশির কাঁদিয়া কহে,
ক্ষতি নাহি তাতে ওহে-
ভোরের স্নিগ্ধতা ছড়ায়ে দিয়ে,
উবে যাই কোন মোহে।
তপন কহিল পরে,
তব তরে হইতে পারি অতি ক্ষুদ্র-
সারা দিনমান ছড়াও দ্যুতি,
আহা কিযে সুখ!
আমি রহি অনিদ্র।
ছোট বাক্স
হাকিকুর রহমান

ছোট বাক্সে কত কথাই
নিত্তি শুনে যাই
বলার তো আর নেইতো কিছুই
শুধুই শোনা তাই।
রহিম বলেন, করিম বলেন,
যদু বলেন, মধু বলেন।
কেউবা হাসান, কেউবা হাসেন
শুনিনাতো কাউকে সেথায়,
গলাটাকে ঝেড়ে কাশেন।
দেশের কথা, দশের কথা
বলেন তাঁরা শুনি
পাশ কাটিয়ে সটকে পড়েন
হলে প্রতিধ্বনি।
বল্লে পরে সঠিক কথা
বিপদ আছে বটে
তাইতো সবাই সামলে চলেন
ঘটার যেটা ঘটে।


Thursday, January 9, 2020

Mother and child
Hakikur Rahman

The baby swings at the mother's lap
Forget about crying
His face like that of the moon
Let's take a look.
Mother can only understand
Baby’s language
Mother and baby’s love
Tremble with affection
Mother and baby’s love
Be immortal
That kindness in the world
Let's spread.
দহন
হাকিকুর রহমান 

ঘোমটা পরা বৌঁ হেঁটে যায়
চেয়ে থাকে সন্ধ্যা তারা
হাসি ভরা মুখটি যে তার
হৃদয় করে পাগল পারা।
সাঁঝের প্রদীপ জ্বালিয়ে ঘরে
আঁচল দিয়ে ঢাঁকে
চাউনিটা তার উঠলো কেঁপে
হাত বাড়িয়ে থাকে।
মৌন মুখে কিসের রেখা
বোঝেনাতো কেউ
ঘরের মায়ায় কাতর হিয়া
দহন জ্বালার ঢেউ।
রৌদ্র-ছায়া
হাকিকুর রহমান 

রৌদ্র-ছায়া করছে খেলা
যাচ্ছে কেটে ভালোই বেলা।
এই ঘন মেঘ করলো আঁধার
দিব্বি সুরুজ চাইছে আবার।
হচ্ছে মনে বৃষ্টি এলো
কৈ যে, কোথায় হারিয়ে গেলো।
বর্ষা ঋতুর একোন সাঁজ
দুমাস জুড়ে নেইকো কাজ।
প্রকৃতিতো করছে মজা
পরিবেশের হচ্ছে ভজা।
কোথাও বৃষ্টি, কোথাও খরা
এমনি করেই চলছে ধরা।
আকুতি
হাকিকুর রহমান 

অনাহারী ভৃত্য, করিতেছে নৃত্য
ইহাতেই মহাজন বিহ্বল,
জীর্ণ-শীর্ণ দেহ, অভাবতাড়িত গেহ
লুকায় সে অলখেতে আঁখিজল।
তাঁহার রসুই ঘরে, নিত্ত রন্ধন করে
একাধিক পাকা পরিচারিকা,
তৃপ্ত আহার শেষে, সুখের নিদ্রা আসে
তাহাদের পাতে পড়ে মক্ষিকা।
তাঁহার বালাখানায়, ভরে অতিথির আনাগোনায়
এককোণে দন্ডায়মান প্রহরী,
সকলেই মদমত্ত, বিনামূল্যে প্রদত্ত
কোণে ভাসে বিষাদের লহরী।
বাগানে ফুটেছে ফুল, মনটা করে আকুল
পরিচর্যায় রহিয়াছে যে মালী,
দিবানিশি খেটে যায়, কাননের পানে চায়
গৃহেতে পড়িয়া রয়েছে শূন্য থালি।
এভাবেই চলিতেছে, সবকিছু ঘটিতেছে
তাহাদের দেখিবার কেহ নাই,
যতই কহিনা শোরে, আছে সব ঘনঘোরে
কর্ণকুহরে তালা মারা- তাই।
নফস
হাকিকুর রহমান 

খানাপিনা, বালাখানা
সবই পড়ে রবে
দেখাশোনা, জানাশোনা
ছেড়ে যেতে হবে।।
পরপারে যাবার তরে
তৈরী থাকিস মন
আসে-পাশে থাকবেনা তো
আত্মীয়-স্বজন।
সামনে-পিছে থাকবে শুধু
নিজের কর্মফল
ধরার উপর রইবে পড়ে
সবার চোখের জল।
এখন কেঁদে নেই কোন লাভ
ক্ষণিকের ভুবনে
দ্বীন-দুনিয়ার মালিক, তাঁকে
রাখি স্মরণে।
বেশ আছি
হাকিকুর রহমান 

ক্ষতস্থানগুলোকে লুকিয়ে রাখার কি সকরুণ প্রচেষ্টা-
মিথ্যের প্রলেপ দিয়ে বারংবার ঢেঁকে রাখি,
যাতে কেউ না দেখে ফেলে তা।
উপলব্ধি প্রতিনিয়তই আঘাত হেনে যায়-
অন্তরের অন্তস্থলে, আর আমি
হাসি মুখে প্রকাশ করি- "বেশ আছি"।
এই "বেশ আছি", ধারনাটা কবে উদ্ভাবিত হয়েছিলো, জানিনা-
তবুও যখন দেখি আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা,
এর ব্যবহারে অতিশয় পটু,
তখন বড়ই বিস্মিত হই!
নশ্বর পৃথিবীটা কতই না উদার-
অকৃপণভাবে সরবরাহ করে চলেছে
জীবন ধারনের সামগ্রীগুলোকে- আর আমরা,
কারণে-অকারণে তাকে ক্ষতি করে যাই।
তেমনি আমি চেষ্টায় রত, ক্ষতস্থানগুলোকে আবার লুকানোর-
কারণ, আমাকে তো বলতেই হবে, "বেশ আছি"।
সত্য-মিথ্যা
হাকিকুর রহমান 

সত্য ডাকিয়া কহে
মিথ্যা ওরে ভাই,
সারাক্ষণ ছলনাতে
তোর জুড়ি নাই।
বিবেকের দংশন বলে
আছে কি তোর কিছু,
বিনা মেঘে বজ্রপাত
ছাড়েনা তোর পিছু।
কথায় কথায় করিস
দিনকে যে রাত,
তোর সাথে পারা দায়
সেকি উৎপাত।
মিথ্যা হাসিয়া কহে
করোনাকো ভয়
মিথ্যার দশদিন
তবু তোমারি হবে জয়।
উৎকরণ
হাকিকুর রহমান 

ধর্তব্যের ভিতরে থেকে
গ্রহণ করি সততাকে
কর্তব্যের বেষ্টনী দেখে
রহিত করি শঠতাকে।
বিবেচ্য-বিবেচনায় ধরি
অনুশীলন করি সরলতা
আরাধ্য-আরাধনায় স্মরি
নিয়ন্ত্রণ করি গরলতা।
বাধ্য-বাধকতার মাঝে
নিজেকে করি সংবরণ
কল্যাণ-বিনির্মানের কাজে
আত্মাকে করি উৎকরণ।
(উৎকরণ- উৎকর্ণ- শুনিবার জন্য ব্যগ্র)
অর্পণ
হাকিকুর রহমান 

তার হৃৎপিন্ড যখন ক্ষয়িষ্ণুপ্রাপ্ত হয়,
তখন আমার হৃৎপিন্ড থেকে কিছু ছিড়ে তাকে দেই
যাতে করে সে নির্বিঘ্নে থাকে-
আর তাতে আমি উজ্জীবিত হই।
এভাবেই প্রতিনিয়ত আমার হৃৎপিন্ডকে
ছিড়ে ছিড়ে তাকে দিয়েছি,
যেনো সে সমৃদ্ধ রয়।
কিন্তু সে কখনই আমার ছেড়া হৃৎপিন্ডের দিকে ফিরেও তাকায়নি।
প্রতিদান
হাকিকুর রহমান 

কুঠার কাঁদিয়া কহে-
ওহে মহীরুহ, চরণে পড়িনু তব,
দান করোহে মোরে একখানি শুষ্ক গ্রন্থি,
যাতে করি হইতে পারি আমি কর্মক্ষম-
রহিয়াছি বহুদিন ক্ষুধাতুর।
মহীরুহের বিশাল পরান-
হেরিয়া কুঠারের অতিভক্তি,
ফেলিল একখানি গ্রন্থি, আর কহিল,
লও হে ভেট মম,
নিঃশন্ক চিত্তে করোহে ইহার ব্যবহার,
তোমা প্রতি ইহা আমার ভালোবাসার প্রতিদান,
প্রীত হইলাম করিতে তোমার যৎসামান্য কল্যাণ।
প্রস্তুত হইয়া কুঠার,
প্রথমেই করিল কর্তন মহীরুহের গোড়াখানি;
হায়রে,
এই জগৎ সংসারে প্রকৃত উপকারীর ইহাই প্রত্যর্পণ!
(কুঠার- কুড়াল, গ্রন্থি- ডাল, প্রত্যর্পণ- প্রতিদান)
শ্রাবণ চিরন্তন
হাকিকুর রহমান 

শ্রাবণ ধারা আসলো ফিরে
মেঘের আঁচল নামলো ঘিরে,
পড়লো চোখে জলের ধারা
করলো হৃদয় পাগল পারা।।
সূর্য হারায় মেঘের ছায়ায়
সরিৎ ভরে জলে
উদাস বাউল সুর যে হারায়
অজানা কোন ছলে।
ঢেউ উঠেছে গাঙ্গের কুলে
দুলছে তরী গুলি
ভাবনাগুলো উধাও হলো
রাখলো কোথায় তুলি।
পবন আবার মান করেছে
থামবেনাকো আর
জলের ছাটা আসুক ঘরে
দিলেম খুলে দ্বার।
(সরিৎ- নদী)
অভিন্ন
হাকিকুর রহমান 

অষ্টগ্রামের শুকুর আলীর, একটা ছিল মেয়ে
দেখতে অতি সুন্দরী সে, থাকতো নেচে গেয়ে।
ঐ গাঁয়েরই মাদবরের পুত, গহর বলে জানি
পড়লো কুনজর, আর তাতে দিলো বিপদের হাতছানি।
কুপ্রস্তাবে হয়না রাজি, করবে এখন কি-
গাঁয়ের ধারে ডেকে নিয়ে, করলো সতীত্বের সমাধি।
পাড়ার লোকে জেনেও করে, না জানার ভাব
যতই বলো, মাদবরের পো, নেই ধনের অভাব।
অসহায় মেয়ের জ্বালা, কেউতো বোঝেনা
গাছের ডালে পেচিয়ে মলো, খবর পেলোনা।
এমনি তরো ঘটছে কতো, অঘটনের ঘটা
কে-বা কাহার খবর রাখে, জানতে পারি ক'টা।
প্রাণের গান
হাকিকুর রহমান 

ধান কাটিতে গায়যে গান, মাঠির চাষীরা
নাও বাহিতে গায়যে গান, ঘাটের মাঝীরা।
ধান ভানিতে গায়যে গান, গাঁয়ের বঁধুরা
স্নান করিতে গায়যে গান, পাড়ার শিশুরা।
গরু চরাতে গায়যে গান, রাখাল ছেলেরা
ফুল তুলিতে গায়যে গান, মালীর মেয়েরা।
ভোরের পাখি গায়যে গান, তরুর শাখাতে
পথের বাউল গায়যে গান, জীবন বাঁচাতে।
মাছ ধরিতে গায়যে গান, গাঙ্গের জেলেরা
ঘুম পাড়াতে গায়যে গান, শিশুর মায়েরা।
প্রাণ জুড়ানো এসব গান, বড়ই সুমধুর
মন থেকে দূর করে দেয়, বেদনা বিধুর।
সোনার গাঁ
হাকিকুর রহমান

মনের সুখে কোকিল ডাকে
আমার সোনার গাঁয়
নয়ন মেলে দেখতে হলে
আয়রে চলে আয়।
শাপলা ভরা পুকুর পাড়ে
ডাহুক ডাকা ভোরে
আম বাগানের মধুর ঘ্রাণে
নেয়যে ডেকে মোরে।
শিমুল, বকুল, পারুল ফোটে
সারা কানন জুড়ে
দোয়েল, শালিক, ময়না থাকে
মনের সুখে নীড়ে।
গাঁয়ের পিছে গাঙ্গের স্রোতে
যায় যে বয়ে তরী
ভর দুপুরে গাছের ছায়ে
গায় যে কে সুর ধরি।
দিনের শেষে সূর্যি নামে
মাঠের সীমানায়
মনের মাঝে কি সুখ আনে
প্রাণের কিনারায়।
ঘুম পাড়ানি মাসি-পিসি
মোদের বাড়ি আসে
সারা দিনের ক্লান্তি ভুলে
স্বপ্ন চোখে ভাসে।
চাকুরিজীবি
হাকিকুর রহমান 

গলদঘর্ম হয়ে,
উঠলেন তিনি হয়ে বাসের যাত্রী
তিল ধারনের জায়গা নেই তাতে,
তবুও গত্যন্তর না পেয়ে
চলতি বাসেই হাতল ধরে ঝুলে আছেন,
সঠিক সময়ে অফিস যাবার প্রণান্তর প্রয়াস।
ঠেলে গুতে একটু ভিতরে যাবার নিদারুণ প্রচেষ্টা,
কারণ, যে কোন মুহুর্তে হতে পারে জীবনটা বিপন্ন।
এক হাতে ধরে আছেন বাসের হাতল,
আর অন্য হাতে আছে গিন্নীর দেয়া টিফিন পট,
কারন, তিন জনার সংসারে একাই রোজগেরে তিনি-
মেয়েটার লেখাপড়ার খরচাও সাশ্রয় করতে হয় বেতন থেকে।
উর্ধ্বমূখী বাজার দরের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয়,
তার উপর আছে অতিরিক্ত বাসা ভাড়া।
তবুও জীবনটাকে একটু ছকে ফেলার চেষ্টা,
আপ্রাণ প্রচেষ্টা-
আর সে জন্যেই যেন পৃথিবীতে আসা।
হাঁটতে চেয়েছিলাম
হাকিকুর রহমান 

একটু হাঁটতে চেয়েছিলাম,
প্রাণ ভরে ভোরের স্নিগ্ধ বাতাসের ঘ্রাণ নিয়ে-
কিন্তু হাঁটা হলোনা, পথের কাঁটাগুলোর জন্যে।
একটু হাঁটতে চেয়েছিলাম, সেই কাকডাকা ঊষায়-
ভোরের প্রার্থনাটা শেষ করে-
যখনও ঘাসের উপর শিশিরগুলো উঁবে যায়নি,
বাঁশবাগানের জোনাকিগুলো কেবল ঘুমুতে যাবার চেষ্টা করছে-
শান বাঁধানো পুকুর ঘাটের ওম ওম জলে
কেউ পা ধুতে আসেনি তখনও, যার উপরে এখনও কুয়াশার প্রলেপ পড়ে আছে,
পুকুরে মাঝখানে নলখাগড়ার ডালটা থিরিথিরি
জলের সাথে নড়ে নড়ে উঠছে, ওখানে এখনও কোন
লাল ফড়িং এসে বসেনি।
গাছের শাখায় বসে বাচ্চা পাখিদুটো মায়ের পাখার নীচে বসে
আড়ামোড়া খাচ্ছে-
আবির রাঙানো সূর্যটা এখনও
ওদের পাখায় এসে আছড়ে পড়েনি।
খুকুমনি মায়ের আঁচলে মুড়িয়ে নিদ্রামগ্ন,
এখনও ঘুম পাড়ানি মাসি-পিসিরা ওর চোখ থেকে
চলে যায়নি।
আদরিনী মা এখনও হেসেল ঘরটা লেপে,
প্রাতরাশের যোগাড় যন্ত্র শুরু করেনি।
বকুল তলায় দু’একটা করে ফুল ঝরা শুরু করেছে-
কিন্তু মালীর ছোট্ট মেয়েটা শাড়ীর আঁচল পেতে,
এখনও কুড়োতে আসেনি।
কদিন আগে ঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া
জামরুল গাছটার ডালের ফাঁক দিয়ে, রবির সোনালী আলো
এখনও উঠোনের কোনে এসে পড়েনি।
একটু হাঁটতে চেয়েছিলাম পথটা ধরে-
কিন্তু হাঁটা হলোনা কাঁটাগুলোর জন্যে,
কে যেনো নিপুন ভাবে হাঁটা পথটায় কাঁটাগুলোকে
বিছিয়ে রেখে গেছে, যাতে করে পাদুটো রক্তাক্ত হয়-
তাই আর প্রাণ ভরে হাঁটা হলোনা।
বর্ষা বন্দনা
হাকিকুর রহমান 

আষাঢ় যায় যে গত হয়ে
বর্ষা নামিছে রয়ে রয়ে।
নামেনিকো ঘন বরষা
চিত্ত হয়নি হরষা।
আসুক চপলা লয়ে শ্রাবণ
বহুক না ক্ষণিকের প্লাবন।
ফুটুক কাননে কদম কেয়া
ভাসুক নদীতে জীবনের খেয়া।
জিজ্ঞাসা
হাকিকুর রহমান 

ভাবগম্ভীর কন্ঠে, জিজ্ঞাসিলেন গুরু শিষ্যকে
হৃদয়াঙ্গম করিতে পারিতেছো কি, এই বিশ্বকে?
অত্যাচার-অনাচারে লিপ্ত হয়ে
ক্ষতি সাধন করিতেছে একে অন্যের,
বুদ্ধি-বিবেচনা পাইয়াছে লোপ
দৃশ্যতঃ হয় যেনো তাহারা পশু বন্যের।
গলদঘর্ম হইবার উপক্রম
হেরিয়া তাহাদের কার্যকলাপ
নীতি-আদর্শের কথা উহাদের কর্ণকুহরে প্রবিষ্ট হয়না
সকলই তাহাদের কাছে লাগে প্রলাপ।
হত্যা-রাহাজানি-সম্ভ্রমহানি
হইয়াছে নিত্য-নৈমিত্যিক ঘটনা
ঘটনাক্রমে কদাচিৎ পরিলক্ষিত হয়
নচেৎ সকলি রহে অনাবিস্কৃত তটনা।
পরিত্রাণের পথ আছে কি ইহা থেকে
কে লইবে আজি এসবের দ্বায়ভার?
কুম্ভকর্ণ হইলে কি চলিবে-
কে রক্ষিবে ঐ ক্ষতিগ্রস্থ পরিজন-পরিবার?
কর্ম
হাকিকুর রহমান 

হেরিয়া ময়ূরের পুচ্ছ, কহে বুলবুলি
আহা, কিযে মনোহর! নাচো চুলখুলি।
কি যাদু আছে ওহে, তব পুচ্ছে?
যাদুকরী মায়ারঙ, বাঁধা আছে গুচ্ছে।
আমিতো সামান্য পক্ষী, অতিশয় ক্ষুদ্র
নৃত্য তব রমণীয়. লাগে যেনো রুদ্র।
ময়ূর কহিল তাহে, ওহে প্রিয় বন্ধু
ক্ষুদ্র জল কনাতেই, তৈরী হয় সিন্ধু।
ধরিত্রীর উপরেতে, সকলেই সমান
কর্মতেই পরিচিতি. তাহাতেই সম্মান।
ভড়ং
হাকিকুর রহমান 

ভড়ং দেখে ফোড়ন কেটে খেকশেয়ালী হাসে
লজ্জা পেয়ে জোনাক গুলো লুকালো ঝাঁড় বাঁশে।
তাইনা দেখে চামচিকেটা মারলো কষে লাথি
লাথি খেয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়লো বিশাল হাতি।
হাতি পড়ার শব্দ শুনে গাধা কেঁদে মরে
গাধার কাঁদন দেখতে হুতুম চশমাটাকে পরে।
চশমা ছাড়া আঁধার বনে চলা ফেরা দায়
ভোঁদড় বেটা ছুড়লো কাদা লাগলো এসে গায়।
এসব দেখে কাঠবেড়ালী কুলুপ আঁটে মুখে
বনবাঁদাড়ে বুনো বেড়াল থাকে যে কোন সুখে।
জনম দুখী জলার হরিণ হারিয়ে গেলো কোথায়?
লম্বামুখো মদন টেকো কোথায় পাওয়া যায়?
তবুও বানর কেনো জানি থামায় না তার ভড়ং
এমনি করেই চলছে জগৎ- হড়কা বিলের হড়ং।
(হড়ং- বান)
শিল্পের সেতু- প্যারিস
হাকিকুর রহমান 

তাকাও!
মানুষ হেঁটে যায়, আবার দাঁড়ায় কিছুক্ষণের তরে
প্রকাশ করে তাদের গোপন, সত্য, আর মিথ্যা হাসি-ঠাট্টার ছলে
আর তুমি, রয়েছো একা দাঁড়িয়ে, শান্ত-সৌম্য হয়ে
কত অতীত সাথে লয়ে, আর কত আগত সময়ের নিমিত্তে
তুমি, তোমার হৃদয়ে কর তাদেরে সংরক্ষণ
যদিও, সব তালা সেখানেই রহে, আর কখনও তাতে ধুলো ধরে না।
Pont des arts- Paris
Hakikur Rahman

Behold!
People passes by, stand there for a while
Reveal their secrets, truths, and lies, with smile.
You, standing their alone, remained calm
For the time beyond, and for the time to come.
You, preserve them in your heart
While, all the locks remain there, never catch the dirt.
দেশী
হাকিকুর রহমান 

সস্তা কথায় ভিজেনাকো চিড়া
বস্তা পচাঁ আলুতেযে কীড়া।
খাস্তা রুটি বেলা নয়তো সোজা
ফোকলা দাঁতের কথা যায়না বোঝা।
নজরানাটা দিয়েই পিড়েয় বসা
শোনা গেলো বউটা কানে ঠসা।
উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাঁড়ে দিয়ে
পদ্মলোচন করলো আবার বিয়ে।
খ্যামটা নেচে পাচ্ছে বেজায় তালি
ধ্যামড়া মুখে দিচ্ছে কতই গালি।
আকাশ দেখো সেজেছে কোন সাজ
ঝড়ের সাথে হবে দেখা আজ।
চুনোপুঁটি করে বেশী বড়াই
খোলা জ্বালে তেঁতে থাকে কড়াই।
মুখ্খু আমি বুঝিনাকো বেশী
ক্ষিদে পেলে খাবারটা খাই দেশী।

Saturday, January 4, 2020

The moment of the Fagun
Hakikur Rahman

The swing that takes place in the air
South windows are open.
The stars glitter in the sky
The mind is so calm less tonight.
The mind is filled with random thoughts
Absent minded gesture in a unknown world.
Floating the boat of wind in the air
Let us color the night of Fagun.
The light and the dark are playing
That is how the whole evening is spent.
অভিলাষ
হাকিকুর রহমান

কায়মনোবাক্যে নিবেদিত করি প্রাণ
উচ্চারিত করি স্রষ্টার গুনগান।
দিবস শুরু করি যেনো তোমারি প্রার্থনায়
সমগ্র দিন উৎসর্গ করি বাঁচিবার প্রেরনায়।
হৃদয়ের অন্তস্থলে রাখি তোমারে সারা দিনমান
প্রার্থনারত হই তোমার, হলে দিবসের অবসান।
দিবানিশি একান্ত মনে তোমারেই উচ্চারি
ভব সাগরে, অকুল পাথারে, তুমি দ্বারা উদ্ধারি।
বেড়াজাল
হাকিকুর রহমান

নিষেধের বেড়াজালে
নিজেকে রেখেছি বেঁধে,
উন্নীত করি চেতনা
শত্রু-মিত্র নির্বিভেদে।
ফেলে আসা দিনগুলি
হৃদয়ে রেখেছি তুলি,
এখানে-ওখানে পদচারণা
হারানো বেদনা ভুলি।
আশে পাশে যত কুশীলবগণ
করে শুধু ছলনা,
হারিয়ে ফেলে, খুঁজি কাহারে
গুণবতী ললনা।
এপথ-ওপথ সারাপথ ঘুরে
ক্লান্ত চরণে বসি,
লক্ষ্যে যারার তরেতো তাই
হালটা ধরেছি কষি।

গল্প
হাকিকুর রহমান

আমার কোন গল্প নেই বলার,
আমার কোন গল্প নেই লেখার,
আমার কোন গল্প নেই দেখানোর,
আমার কোন গল্প নেই ভাগ করে নেবার,
তাই বলে আমার গল্পের ঝুড়িটা খালি নেই-
সেখানে আছে আমার বেঁচে থাকার গল্প।
মৌসুমী ধান
হাকিকুর রহমান

পান্তা ভাত আর কাঁচা মরিচ খেয়ে
চলছে চাষী মাঠের পানে ধেয়ে।
কাটতে হবে আসার আগে বান
বুনতে হবে নতুন করে ধান।
আগাম ধানে ফলন হবে ভালো
মনের মাঝে জাগে আশার আলো।
মৌসুম দেখে আবাদ করে যাওয়া
তাতেই কাপড় তাতেই হবে খাওয়া।
দিগন্ত
হাকিকুর রহমান

পূবের আকাশে উঠেছে সূর্য
নতুন দিনের শুরু
ভোরের আলোকে রাঙিয়েছে ভুবন
সাজিয়েছে শাখা তরু।
ইশারা আবার পথ চলিবার
সুনীল দিগন্তে
চেতনার শুরু নতুন করে আজ
প্রাণের সীমান্তে।
থিরি থিরি বহে দখীনা বাতাস
দেয় জুড়িয়ে প্রাণ
এসো পথে নামি দৃঢ় প্রত্যয়ে
গেয়ে জীবনের গান।
কেন?
হাকিকুর রহমান

ছায়া,
আলোর প্রতিফলন ভেদে-
কখনও ক্ষুদ্রাকৃতির,
কখনও লম্বাকৃতির,
আবার কখনও আঁধারে হারিয়ে যায়।
মায়া,
সেতো হৃদয়ের সেতুবন্ধন-
তবুও কখনও হয় হের ফের,
আর কখনও বা বিস্মৃত হয়।
কায়া,
প্রতিনিয়তই ধাবিত হয়-
ক্ষয়িষ্ণুতার পানে,
ক্লান্তি, অবসাদ, বিষন্নতা ভর করে প্রতিক্ষণে।
জায়া,
সেতো প্রেমের অবতারিনী-
তবে কেন হারায়ে যায়,
কোন অবচেতনে?
ঢেঁকে যায় অস্পৃষ্ট আবরনে।
অঙ্কিত পথ
হাকিকুর রহমান

বিদীর্ণ বক্ষে, হেরি সমক্ষে
ভাবনার পরিত্রাণ
কম্পিত লয়ে, ঘুরি বলয়ে
আছে কোন সমাধান?
বাসনার ভেরী, সহেনাকো দেরী
ঘুরে ফিরি পিয়াসায়
অঙ্কিত পথে, গতি কোনমতে
চলা যেনো কি আশায়।
পাছে হয় দেরী, নহে হেরা ফেরি
সমুখের পানে চলা
দিবা যায় চলে, নাহি কিছু বলে
তবু তার কথা বলা।
অযাচিত মনে, ফিরি ক্ষণে ক্ষণে
দেখি তমসায় আলো
জীবনের শিখা, পেরিয়ে পরিখা
তবু তারে বাসি ভালো।

পুঁথি
হাকিকুল্লাহ* (হাকিকুর রহমান)

অবনী আঁধারে ঘিরে
নিশীথ আসিলো ফিরে।
চাতকী ফিরিয়া চায়
মন জাগে কি মায়ায়।
গগনে জাগিলো শশী
নীরবে চাহে উর্বশী।
সুবাস ছড়ালো যূথী
আনু লিখিলো পুঁথি।
জগতে আনিলো বিস্ময়
অতীত, সেতো সবই কয়।
নাড়ী
হাকিকুর রহমান

ধান শালিক আর দোয়েল পাখির দেশে
অবাক হলেম জল টলমল নদীর কাছে এসে।
ভরা নদীর দুই ধারেতে কত জনার বাস
নতুন গজে ওঠা চরে চলে ধানের চাষ।
মন কাড়ানো হলদে ফুলে চোখ জুড়িয়ে যায়
শিমুল-বকুল-জুঁই-চামেলি ফুটছে সারা গাঁয়।
দখীন হাওয়া ধানের মাঠে ঢেউ তুলেছে আজ
পলাশ-চাঁপা রঙিন হলো সেজে নতুন সাজ।
গাঁয়ের বঁধু যায় যে পরে বাসন্তী রং শাড়ী
শিশির ভেজা ঘাসের মাঝে পোতা আমার নাড়ী।