Saturday, June 20, 2020

Guide of light
Hakikur Rahman


Waking up in the middle of the night
Who goes to the front
Illuminates the path
Wake up and sing.
Becoming the guide of light
Continue to walk
Filled with hope
Overwhelmed by the heart.
This is a vast thrill
It feels like life
That is his heart-wrenching
Wake up and sing.
দীপ্তি
হাকিকুর রহমান

দীপ্তিময় এক খুদে পোকা,
খদ্যোত,
আর আমরা জানি তাকে জোনাকী বলে-
নিবেদিত প্রাণ, স্বগোক্তি করেনাতো সে।
শুধু, এতটুকু আঁধার সরানোর তরে
কি প্রাণান্তকর প্রয়াস!
বাঁশবাগানের ধাঁরেতে থেকেই সুখী,
গহন রাতে নিশাচরগুলো যবে জেগে উঠে,
আর রাতের মধ্য প্রহরে শৃগালেরা আড়ামোড়া ছেড়ে গেয়ে উঠে,
তখনও এতটুকু আলো ছড়ানোর তরেই ব্যস্ত-সমস্ত।
নীরবে, নিভৃতেই সে কালাতিপাত করে,
কারও সাতেও নেই- পাঁচেও নেই,
নিঃশব্দেই আনাগোনা করে-
বাঁশের কঞ্চিটাকে সাথী করে।
আর অপেক্ষায় থাকে,
নতুন এক প্রভাতের।
জীবনের গান
হাকিকুর রহমান

হোগলা পাতার ছাউনি গাঁথিয়া
বেঁধেছে তাহাদের ঘর,
হাসিখুশী ভরা গেহকোণে তবু
কুহকিনী তৎপর।
ঘরের মায়াতে রহিয়া গৃহিণী
আড়াল করিয়া রাখে,
সুখেতে দুখেতে দুই সহচর
একান্তে মিলিয়া থাকে।
পুরাতন জালে গাব মাখিয়া
নদীপানে জোরে ধায়,
জেলেনী তাহার পথ পানে চাহি
মিহি সুরে গেয়ে যায়।
নয়া জোয়ারের পানিতে দেখেছে
নব জীবনের গান,
কুলুকুলু বহা যমুনার তীরে
ভরা থাক মন-প্রাণ।
উদাস বাউল
হাকিকুর রহমান

কোন সে অচিন গাঁয়ের বাঁকে
উদাস বাউল যায় যে হেঁটে,
গানের সুরে উতাল করে
প্রাণটা সবার দেয় যে কেটে।
পথের পথিক চায় যে ফিরে
সেই সুরের ঐ অমোঘ টানে,
ভর দুপুরে মাঠের চাষীর
সেই সুরেতে নিদ্রা আনে।
হৃদয় ভরা কথার মালায়
ভরা যে তার করুণ সুর,
এক তারাটা হাতে নিয়ে
হেঁটে চলে কোন সে দূর।
গুণ
হাকিকুর রহমান

চাঁদেরে হেরিয়া কহে, কেরোসিন শিখা
কপোলেতে দাও মোরে, আঁকি রাজটিকা।
যবে তুমি ঢাঁকি যাও, অমাবস্যায়
তবু আমি আলো দিয়ে, যাই যে হেথায়।
মাটির প্রদীপ শুনি, অট্টহাসি হাসে
অর্চনা-প্রার্থনায় মোরে, বেশী ভালোবাসে।
চাঁদ হাসি কহিল, দু’জনাই শোনো
সমগুণে গুনান্বিত, লাজ নাই কোনো।
প্রতীক্ষা
হাকিকুর রহমান

তটিনী বহিয়া যায় কুলুকুলু গাহিয়া
তরুণী দাঁড়ায়ে রয় আলুথালু চাহিয়া।
কবে যে ভিড়িবে তরী সাথে লয়ে সখারে
রাখিছে যতন করি মনো মাঝে তাহারে।
আবেগ বাড়িয়া যায় তাহারে না দেখিয়া
হৃদয়ো মাঝে আর রহেনাতো সে হিয়া।
সকলে আসিলো ফিরে সেতো ফিরে এলোনা
দেখা দিবে বলে তবু আর দেখা দিলোনা।
ভাবিয়া উদাসী হয় তার তনু-মন
আঁখি দু’টি বহিয়া তাই ঝরে বরষন।
এমনি করিয়া কাটিয়া গেলো কতকাল
তবুও প্রতীক্ষায় রয় ছাড়েনাতো হাল।
ইচ্ছে
হাকিকুর রহমান

অব্যক্ত ইচ্ছেগুলো,
ন্যাড়া বাবলার ঝোপেই অদৃশ্য রয়ে গেলো।
কাছে কিনারের মানুষগুলোর খেয়ালি বসতি রইল পড়ে,
অসম চিন্তার তটে-
অধরা বৃষ্টির গান শুনি,
আঁখি মেলে, অশ্রু ফেলে-
মিশে যায় তা রন্ধে রন্ধে।
পোড়াবাড়িটার আঙিনায় শুধু এখন ঘুঘু চরে,
নির্জনতা ভরে থাকে সারাক্ষণ,
অযত্নে বেড়ে ওঠা লতাগুল্মের ফাঁক দিয়ে,
উঁকি দেয় ছেঁড়া চাঁদ-
আর কুরে কুরে খায়,
নির্মোহ আশাগুলোকে।
তবুও অকস্মাৎ আক্রান্ত হয়-
অস্ফুট ইচ্ছেগুলো, শেষ নিদ্রার উপত্যকায়।
পংক্তি
হাকিকুর রহমান

পংক্তিগুলোকে দিলেম স্বাধীনতা,
যাক উড়ে ওরা নিঃসীম শূন্যে-
উড়ে বেড়াক বাঁধাহীন ভাবে,
যাতে করে কেউ আর ওদেরকে
অযথা বন্দী করতে না পারে,
বলে চলুক ওরা ওদের হৃদয়ের কথা মন খুলে।
আর কোন থামাথামি নেই কোন কারণে,
মত্তচিত্তে আত্মপ্রকাশ ঘটুক সকলের।
বিমূর্ত আকাঙ্খায় রাঙিয়ে দিক,
বহুকাল না চলা পথগুলোকে-
হৃদয়ের মরচেগুলোকে ঘষে ফেলে দিয়ে শানিত করে,
ফের আবার দিলেম পংক্তিগুলোকে ছেড়ে ...
কিছু
হাকিকুর রহমান

কিছুক্ষণ, কিছু কাল, কিছু দিন, কিছু মাস, কিছু বছর,
কিছু যুগ, কিছু শতাব্দী, কিছু সহস্রাব্দ-
সকলই ঐ “কিছু”র মধ্যেই সীমাবদ্ধ।
আর তা অনন্ত মহাকালের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কিয়দংশ।
এই “কিছু”র মাঝেই ঘুরছে জীবন,
এই “কিছু”র মাঝেই সীমিত তার বিচরণ।
যদিও এই “কিছু”, শুধুমাত্র কিছুকেই নির্দেশ করে,
তবুও এই “কিছু”তেই ব্যাপ্তি,
“কিছু”তেই প্রাপ্তি,
“কিছু”তেই পরিসমাপ্তি।
আকাঙ্খা
হাকিকুর রহমান

চর্বিত চর্বণ
বর্ধিত অর্পণ।
কল্পিত সুখেতে ভাসি
খন্ডিত হৃদয়ে হাসি।
ভাবনার উদয়ে দৃশ্যমান
কল্পনাবিলাসিতায় মূহ্যমান।
বল্গাহীন চিন্তা-চেতনা
অর্ঘ্যহীন আরাধ্য আরাধনা।
ভাবিয়া নিশ্চুপ রহি
বিমুক্ত জোয়ারে বহি।
ঘটনার অবতারণায় লুব্ধ
নাতিদীর্ঘ বাতাবরণে ক্রুদ্ধ।
অবিমিশ্রিত ফলাফল
শূন্য হইতে শুরু হউক ধরাতল।
শীতের পিঠা
হাকিকুর রহমান

ইষ্টিকুটুম, মিষ্টি কুটুম
এসো মোদের বাড়ি
খেতে দেবো শীতের পিঠা
বোসো তাড়াতাড়ি।
চিতই পিঠা, ভাপা পিঠা
আছে আমার কাছে
গরম গরম খাও, নাহলে
ফুরিয়ে যাবে পাছে।
কুলি পিঠা, পুলি পিঠা
আরও দেবো খেতে
ভিজিয়ে বসে খেতে হলে
বোসো পিড়ে পেতে।
পাকান পিঠা, পাটিসাপটা
সাথে আরও খাবে
একটি রোসো, খানিক বোসো
জুড়োলে স্বাদ পাবে।
ছড়াঃ হোৎকা পেটুক
হাকিকুর রহমান

ঠোঁটটা লম্বা, নাকটা ভোঁতা
চোখটা ট্যারা-
থুতনি থোতা।
কানে খাটো, পা’টা বাঁকা
গদাই লস্করি-
চালটা ফাঁকা।
মুখে কুলুপ, তাসের তুরুপ
চলনে বলনে-
দেখায় স্বরূপ।
পেট্টা মোটা, দিচ্ছে খোটা
ঝলসানো খাসী-
খাচ্ছে গোটা।
বদের হাড্ডি, বেঁধে চাড্ডি
সারাক্ষণ জুড়ে-
খেলে কাবাড্ডি।
প্রকৃতি
হাকিকুর রহমান

নিলিমার পানে চকিত চাহিয়া,
দুই বাহু উন্নীত করিয়া জিজ্ঞাসিলাম-
“ওহে অন্তরীক্ষ!
তোমার সপ্তর্ষীমন্ডল কি রহিয়াছে এখনও অক্ষুন্ন?”
বিষন্ন বদনে সে উত্তরিল-
“মনুষ্যকুলের বাধাহীন কার্যকলাপে
ওজনস্তরে ক্ষয় ধরিয়াছে,
ইহার প্রভাবে ধরিত্রী হইতেছে বেসামাল;
কোথাও অতি খরা,
কোথাও অতি প্লাবন,
কোথাও প্রলয়ংকারী ঝড়,
কোথাও সুনামি,
কোথাও হিমবাহ।
তবে কি তাহারা, নিজেদের পরিসমাপ্তি
নিজেরাই ঘটাইবে, অচিরে!”
ব্যবচ্ছেদ
হাকিকুর রহমান

হৃদয়ের ঐচ্ছিক ব্যবচ্ছেদ-
তাও আবার সনাতন পদ্ধতিতে নয়,
অত্যাধুনিক সয়ংক্রিয় প্রযুক্তিতে-
যাহা ইতিপূর্বে গোচরীভূত হয় নাই।
নিসংকোচে তাই,
বর্ননা করিতে পারা যায়,
সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়াসমূহ।
ভাবের উদ্রেক হইবার কোন আশংকা নাই,
কারণ কোন মহামারীতে আক্রান্ত হয় নাই তাহা।
নিরেট রুটিন মাফিক কর্মকান্ডসমূহ-
তবে প্রাক সতর্কতা অবলম্বন করা হইয়াছে,
যাহাতে-
অকাল মৃত্যু না ঘটে,
যেহেতু সহমরণে যাইবার কেহ নাই, অগ্রে-পশ্চাতে।
কহিলাম
হাকিকুর রহমান

ঘরণীকে কহিলাম-
সদয় হও!
সে শুনিলোনা কোন কথা,
বাড়িলো হৃদয়ে অযাচিত ব্যথা।
ধরণীকে কহিলাম-
দ্বিধা হও!
সহিতে পারিনা আর,
হেরিতে পারিনা সকল রুদ্ধদ্বার।
রজনীকে কহিলাম-
নিদ্রা দাও!
বিনিদ্র যামিনী অতিক্রান্ত করিয়া অতি ক্লান্ত আমি,
তাইতো কম্পিত চরণে, চলিতেছি কোন প্রকারে থামি থামি।
তরণীকে কহিলাম-
পারে লও!
সে অন্য অভ্যাগতবৃন্দকে লইয়া প্রস্থান করিলো,
কিসের হোমাগ্নি অন্তকরণে প্রবিষ্ট হইলো।
অতঃপর,
বিমগ্ন চিত্তে রহিলাম বসি,
দিবাকে ডিঙিয়া আবির্ভূত হইলো শশী।