Thursday, May 12, 2022

 

সহমরণ
হাকিকুর রহমান
উন্মত্ত আকাঙ্ক্ষার দেয়ালে
কে যেনো এঁকে যায়
আগোছালো তুলির ছোঁয়া দিয়ে-
আক্ষরিক অর্থে হয়তোবা
তার কোনো দাম নেই
বোঝাবেই বা কারে
কোন সে মনোবাঞ্ছা নিয়ে।
সময়ের অগ্রদূত হবার প্রচেষ্টা
করেছিলো বেশ
হৃদয়ের চত্বরে ঘুরে ঘুরে-
সে এক অন্তহীন বৃত্ত
আর তার পরিধি ক্রমবর্ধমান
ফলে সব আকাঙ্ক্ষা যায় ভেঙেচুরে।
তবুও অব্যক্ত চিত্তে
অবকাশহারা রুঢ় ব্যথাগুলো
নিয়েই অগ্রগমন-
কেউ কি জেনেছে
কোথায় যে কার পরিসমাপ্তি,
আর সেই যন্ত্রণা নিয়ে
নিয়তির বলিরেখার সাথেই
হয় কি’বা সহমরণ?

যখন কোনো একটা কিছু আপনি আন্তরিকভাবে চাচ্ছেন, কিন্তু পাচ্ছেন না তখন সেটার প্রতি আপনার আগ্রহ ক্রমাগত বাড়তে থাকে। আর যখন সেটা আপনার কাছে এসে ধরা দেয়, তখন কিন্তু আপনার আগ্রহটা তার প্রতি ক্রমাগত কমতে থাকে। এটাই মনুষ্য চরিত্রের গুঢ় রহস্য!

 এই গ্রহে মানুষই সম্ভবত একমাত্র সত্তা যারা জীবনাবসান অবধি মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকে।

 

অকাল গ্রীষ্ম
হাকিকুর রহমান
তপ্ত দিনের জ্বালা বাষ্প
বুদবুদ করে
ইচ্ছের দেয়ালে-
শিওরে কাঁপে স্বপ্নগুলো
অবিরামভাবে
কোন সে খেয়ালে।
রোদ্রহরা মেঘে ধরণীটাতে
একটুখানি
শীতলতা আনে-
আবার কোন দুর্বৃত্ত ঝড়ো হাওয়া
নিষ্ঠুর ভাবে
প্রকৃতিতে আঘাত হানে।
বিকেলের আকাশটা মনে হয়
কোন বিচলিত
শিল্পীর আগোছালো ক্যানভাস-
ছায়াবিথী ঘিরে ধূসর বাতাসেরা
খেলা করে, এটা কি
প্রকৃতির কোনও পরিহাস।
সকরুণ চোখে বিহগী চায়
আকাশের পানে
কিইবা আর চাওয়ার আছে-
ধরা দেয়নাতো সুরভিত পুষ্প মন্ডলী
এই অকাল গ্রীষ্মে
আর ভ্রমরের কাছে।

 

প্রতিশ্রুতিহীন আত্মবিশ্বাস
হাকিকুর রহমান
সোনালী রোদ্দুরের তুলি দিয়ে আঁকা
কার অবয়বের ছবি-
কার সিঁথিতে কে দিলো গোধূলি
রাঙানো সিঁদুর
আর তাই নীরব রইলো কবি।
হঠাৎ খুলে দিয়ে স্মৃতির জানালাটা
কে যেনো অপলকে চায়-
শরতের মেঘে ভেসে গিয়ে কার আশা
এই অবেলায়
কিইবা ফের খুঁজে পায়।
স্বপন রাতিতে কোন দু’টি প্রাণ
বিলীন হয়েছে যে কবে-
জোছনার আলোতে ভিজে
দখিনা হাওয়া
কার চুলে বিনুনি দিয়েছিলো যবে।
নীলচে মেঘের ভার বইতে গিয়ে
আকাশটা কখন গেলো যে কেঁদে-
কোন অভাগী কবে যে গৃহছাড়া হলো
কেউ তা জানে না
তবুও অগোচরে, কেউ যেনো
নানান ফন্দি গিয়েছে ফেঁদে।
তাই তো অসময়ে আসা বরষার
অপেক্ষায় থাকা-
প্রতিশ্রুতিহীন আত্মবিশ্বাস নিয়ে
অন্তহীন প্রহর গুনে
সেই চিরচেনা নামখানি ধরে ডাকা।

 

মর্মের বাণী
হাকিকুর রহমান
এই আসা-যাওয়ার পথের ওপরে
পড়েছিলো যবে রৌদ্রস্নাত কায়ার ছায়া-
দিবসের প্রখর আহবানে
বেড়েছিলো কার তরে যেন মায়া।
দূরের তারারা ডেকেছিলো
বোধহয় হাতছানি দিয়ে-
আর হেঁটে ফিরেছিলো কোন অচেনা পথিক
তার শীর্ণ দেহখানি নিয়ে।
বেজেছিলো কোন সুরে
কোন বৈরাগীর ছেঁড়া তারের একতারা-
অচেনা পথিক, তবু হেঁটেছিলো সেই পথে
হয়নি তখনও পথ হারা।
জ্বেলেছিলো নিভৃত চয়নে
কোন গৃহকোণে, সন্ধ্যার দীপালোক-
ডেকে ফিরেছিলো, কে যেনো কাহারে
পথপানে চেয়ে, ভরেছিলো ভেজাচোখ।
ভাবের আবেগে, ভাঙেনিকো ঘুম
কোনও এক অভাগীনীর যেনো কবে-
নৈবদ্যের থালিটা হাতে নিয়ে
ঘোরে কোন পূজারী, কুহেলিকা ভরা এই ভবে।
আশার প্রাসাদ পড়েছে যে ভেঙে
তাহা আর গড়িবার সময় যে নাই-
সঘন রাত্রি কি কভু শোনাবে তার
মর্মের বাণী, শুধুই কেঁদে ফিরে তাই।

 

স্মৃতিহীন পথ
হাকিকুর রহমান
উদ্ধত বেগে, গ্রাস করে নিলো
দিবসের আলো
ছন্নছাড়া সন্ধ্যা-
উন্মুখ হয়ে, তাই চেয়ে রয়
কি যে কথা কয়
রাত্রিতো সে মাকাল বন্ধ্যা।
সহচরী প্রেম, যেনো নেশা করে
হয়ে ভবঘুরে
কেড়ে নিলো যত ইচ্ছে-
সহযোগী আশা, খুঁজে ফেরে তবু
ভোলেনাকো কভু
তাইতো জানান দিচ্ছে।
বেদনার সাথী, কেনো একা হাঁটে
মননের বাটে
খেলা করে যায় অবিরাম-
বেহিসেবি খাতা, সেতো খালি রয়
কিছু নাহি কয়
তবু নেই তার কোনো বিশ্রাম।
শিওরের বাতি, জ্বলে নিভু নিভু
বলে যায় তবু
নীরবে নিজের কথাগুলো-
শিথিল শয্যা, খালি রয়ে যায়
কি’বা খুঁজে পায়
স্মৃতিহীন পথে বাড়ে ধুলো।

 মানুষের বাইরের দিকটাই সবাই দেখে। কিন্তু, তার ভিতরটা যে কতো কদাকার, তা একমাত্র সেই বোঝে, যে তার সাথে ঘর করে।

 

পথটা নেইকো স্মরণে
হাকিকুর রহমান
তমসা ঘেরা আকাশ
ভাবনায় ঘেরা হৃদয়খানা-
ভাবের ওপরে কার মন ছুটে
নেই তা তো আর জানা।
বুড়ো অশথের শাখে
বিহগী কি সুরে গায়-
একা পথে হাঁটা পথিক
হারায়ে কি কিছু পায়?
ভূমির ওপরে জমেছে ঘাস
কেইবা আর করে পরিষ্কার-
চাতকীর প্রেমে চাতক ভজেছে
নইলে হবে সে যে বহিষ্কার।
মনের অগোচরে রইলো পড়ে
কার হারিয়ে যাওয়া মন-
তমসা ঘেরা রাত্তির জুড়ে
জেগে রয় সারাক্ষণ।
শ্রাবণের ধারা ঝরে
হৃদয় নদীর ওপারে-
তাতেই ছুটেছে জোয়ার
কেইবা বোঝে কি তারে।
পিঠের ওপরে পড়েছে ভার
বইবো এবার কেমনে-
মাটি-কাদায় জমেছে চরণ
পথটা আর নেইকো স্মরণে।

 জীবন জীবনের মতই চলে- চাইলেও তাকে নিজের মত করে ম্যানিপুলেট করা যায় না।

 কেহ কেহ আছেন সারা জীবন কর্তব্যই করিয়া যান, আর কেহ কেহ তাহা ধর্তব্যের মাঝেই আনেন না।

 বাহির হইতে কোনও ঘরকে দেখা আর ভিতরে থাকিয়া তাহা অনুধাবন করা- এই দুইয়ের মাঝে বহুত ফারাক!

 

পানসি নাও
হাকিকুর রহমান
জোয়ারের জলে, কে ভাসালো
অসময়ে, ওই পানসি নাও-
ছৈটা তো তার কবেই ভেঙেছে
তাইতো লাগেনা ছেঁড়া পালে
বয়ে যাওয়া দখিনা বাও।
কপালের ফেরে, বৈঠাটি
আবার, গিয়েছে কবে
পড়ে জলে-
তাইতো ওপারে আর
যাওয়া তো হলো না
অমোঘ নিয়তির ছলে।
ভাঙ্গা বৈঠা নিয়ে তবু
মাঝী, জোয়ারের স্রোতে ভাসে-
খড়ো রজ্জুর সাথে
দাঁড়খানি বেঁধে
বয়ে যায় কোন আশে।

 

ধাবমান তীরটাকে শুধালাম, তা হঠাৎ করে থামলে কেনো?
সে হতভম্ব হয়ে উত্তর দিলো, জানিনাতো! হয়তোবা কেউ ধনুকে অসময়ে টান দিয়ে দিয়েছিলো, কিম্বা, হয়তোবা লক্ষবস্তু নির্ধারন করা হয়নি।
আমি ফের কইলাম, তাই বলে অমন করে ছুটতে হবে?
সে নিরূপায় হয়ে কইলো, সবাইইতো ছুটছে, তাহলে আমিই বা ছুটবো না কেনো?
- লক্ষহীন যাত্রা কখনও সুফল বয়ে আনেনা।
- হাকিকুর রহমান

 

অন্ধগলি
হাকিকুর রহমান
অন্ধকার গলিটার ওই মাথায়
কি আলোকোজ্জ্বল কোনও
আর একটা গলি লুকিয়ে আছে?
ডাইনে তাকালে
যায়না দেখা কোথাও কোনো আলো,
বামে যদি খেয়াল করি
একটা জানালাও খোলা নেই,
পিছনে তাকাবার সাহসটা
হারিয়ে ফেলেছি সেই সে কবে!
তাইতো অনন্তকাল ধরে
ওই সেই আলোকোজ্জ্বল
পথের আশাতেই থাকা।
মাঝরাতের চিন্তার পাঠশালায়
ঠিক অনেক জানালা খোলা,
সেইখানে অযতনে রয়েছে পড়ে
একখানা ধূসর খাতা,
যার পাতায় পাতায়
কিছুই কি লেখার ছিলো না
কারও, কোনো কালে?
সময়ের অবিচ্ছেদ্য চিকণ
বিনুনিতে কে দিলো
অন্য আর এক
অদৃশ্য হাতের ছোঁয়া!
আর তাই ওই সেই
অন্ধগলিতেই চলে আনাগোনা।

 

দুঃখ নিবিড় সন্ধ্যা
হাকিকুর রহমান 
 
রইলো হেথায় কাছে
ইচ্ছেগুলো সঙ্গী হয়ে,
এফোঁড় করে-ওফোঁড় করে
ডাক দিয়ে যায় পাছে।
দুঃখ নিবিড় সন্ধ্যাগুলো
রাতের কাছে যেই বিকোলো
চোখটা মুদে রই-
প্রদীপটারে নিভিয়ে দিয়ে
ভাবনাগুলো সঙ্গে নিয়ে
গোপন কথা কই।
একলা পথে চলছে পথিক
পা বাড়ানো হয়নি সঠিক
তবু হেঁটে যায়-
চোখের জলে ভিজলো যে ক্ষণ
উদাস হাওয়ায় ভাসলো যে মন
পলক ফিরে চায়।
মুঠো ভরা জ্যোৎস্না মেখে
মনটা যে ফের উঠলো ডেকে
সাড়া দেবে কাকে?
চোখের পাতায় স্বপ্ন আঁকি
মনের কথা লুকিয়ে রাখি
কইব যে কার ডাকে!
একটু আশার মাঝে
বেঁচে থাকার ইচ্ছে নিয়ে
সুর ছাড়া গান যাই যে গেয়ে
প্রতি সকাল সাঁঝে।

 আবেগের প্রকাশ যদি হয় বচনভঙ্গিতে অথবা দেহ ভঙ্গিতে, তবে তা ক্ষণস্থায়ী হয়। যদি তা হয় সংগীতে অথবা লেখনীতে, তবে সেগুলো কালের সাক্ষী হয়ে রয়ে যায়।

 

রাতকে যদি প্রশ্ন করা হয়, তুমি এতো আঁধার কেন?
সে হয়তো উত্তর দিবে- সূর্যের অভাবে।
আসলে কি তাই?
পৃথিবীর অপর প্রান্তে সে কিন্তু আলো ছড়াচ্ছে বেসুমার।
আসলে এটা একান্তই দূরত্বের ব্যাপার।
দূরত্বই আমাদেরকে আলো থেকে আঁধারে নিক্ষেপ করে।
- হাকিকুর রহমান।

 

আর কিছুই নেই মনে
হাকিকুর রহমান 
 
কার যে শাড়ির আঁচল ওড়ে
দখিনা হাওয়ায়,
শিউলিতলা ভরে
ঝরে যাওয়া ফুলে-
কোঁচড় ভরিয়ে কুড়োনোর পরও
রয়ে যায় বহু ফুল,
তারা তো নীরবে, নিভৃতে কাঁদে।
ভরা চৈত্রের প্রখর রোদে
মেঘের সাঁকোটা ভাঙ্গে আর গড়ে,
ক্ষণকালের ঝরে যাওয়া
বৃষ্টি থেকে এক আঁজলা
জল নিয়ে
পাপিয়ার মনে কত যে সুখ!
বুনো ঝর্ণার জলে ভাসে
কত বিবর্ণ ঝরাপাতা,
সাথে ভাসে
কার যে গোপন অভিসারের
আকাঙ্ক্ষা-
না জানি কিসের আশায়
দিন কাটে
পাশে বেড়ে ওঠা, লজ্জাবতী লতার।
সেই সে ফাগুনে,
কে যেনো ঠিকই এসেছিলো
রঙিন শাড়ির আঁচল উড়িয়ে
বুনো ঝর্ণার নুড়িগুলো কুড়িয়ে-
তারপর......
তারপর,
আর কিছুই নেই মনে।

 

বেদনার অনল
হাকিকুর রহমান 
 
পেরিয়ে যাওয়া পথটা রয় পড়ে
কোন সে অবাক করা শিল্পীর
অঙ্কিত নিয়মে-
কারও বা পায়ের ছাপ রয়ে যায়
কারও বা হৃদয়ের ক্ষতচিহ্ন লুকিয়ে থাকে-
দিবসের জানালা ভেঙে
তবুও জাগে রোদ্রকরোজ্জ্বল সূর্যটা।
কার চিন্তিত বাঁশি ডাক দিয়ে যায়
কেইবা হাতছানি দেয় অগোচরে থেকে-
তবুও পেরিয়ে যাওয়া পথটা
রয়ে যায় সাক্ষী হয়ে
পাওয়া- না- পাওয়ার মাঝে
কার অনবদ্য আহবানে।
হৃদয়ের সিঞ্চিত মেঘের চূড়ায়
কার যে আদিবাস-
পাহাড় গুলোকে অতিক্রম করে গেছে
কবে জানি,
কোন সে অনিশ্চিত নিয়মের মাঝে থেকে।
অনুভূতির আরতি বুকে নিয়ে
তবুও পথটা জাগে
কার আগমনীর অপেক্ষায়
কোন সে স্বপন রাতের অভিসারে।
চেনা- অচেনার প্রাচীর ভেঙে
চৌচির হয়
খ্যাপাটে সময়ের সীমারেখায়।
তথাপি কে যেনো তৈরি করে যায়
কার স্মৃতিসৌধ সেখানে।
বেদনার অনলে জ্বলেই কি তবে হবে শেষ?!

 

দুর্ভেদ্য প্রহর
হাকিকুর রহমান 
 
তাবৎ- অপ্রকাশিত, অমীমাংসিত দুঃখগুলোকে
সাথে করে, আত্মার সাথে গভীরতম
কথোপকথন-
বিধ্বংসী আকাশের কোলে মেঘেরা
তবুও ভাসে, এ যেনো কোন অভাগার নিয়তির
প্রতিফলন।
মনের তাকে সাজানো রয়েছে যদিও
অনেক আবেশে, কার সে বিলাসী
ফুলশয্যা-
কোন সে ছলে জ্বলে যায়
কার আত্মা, তবু সাড়া নেই, এ যেনো
কিসের লজ্জা।
সাঁঝের মায়াবী আঁচলে কার স্মৃতিগুলো
আগলে রেখে, বর্ধিত করা হয়
কোন সে সৃষ্টি-
নীলিমার নীলে ভেসে ওঠে কার মুখছবি
অজানা বিস্ময়ে, আর তাতে বাঁধা পড়ে রয়
কার অন্তর্দৃষ্টি।
মনের মুকুরে রাঙালো যে কোন ফাগুন
অতিশয় নীরবে, যার পদধ্বনি কখনও
যায়নি শোনা-
কোন সুখের বিশ্বাসে ভর করে
জীবনটা চলে, যদিও দুর্ভেদ্য প্রহরগুলোকে
যায়না গোনা।

পৃথিবীতে এমন কিছু মানুষ (আমি তাদেরকে অবশ্য হতভাগা বলি) আছে, তারা সারা জীবন নিবেদিত ভাবেও যদি কারও জন্যে সবকিছু করে যায়, তবুও দিন শেষে শুনতে হয়, "তুমি আমার জন্যে কিছুই করোনি!" (দুর্ভাগ্যক্রমে আমিও সেই দলেই পড়েছি।)

প্রয়োজনে হোক, কিম্বা অপ্রয়োজনে- নিজের ঢোল নিজেই পেটান। নইলে, ঐযে জীবনের ব্যাকবেঞ্চে বসেই সারাটা জীবন কাটিয়ে দিতে হবে। সবাই ভালো থাকবেন।

 

সফলতা বনাম ব্যর্থতাঃ
কোনো একটা পথ ধরে কাউকে কাউকে দেখা যায় জীবনের সফলতার পরম শীর্ষে উন্নত হয়, আবার সেই একই পথ ধরে কাউকে কাউকে দেখা যায় জীবনের ব্যর্থতার চরম রসাতলে পতিত হয়।
এক্ষেত্রে বহু উদাহরণ টানা যেতে পারে। আমি একটা ছোট্ট উদাহরণ দিতে চাই। যেমন, অনেক কলেজ ড্রপ আউট কে দেখা যাচ্ছে বিশ্বের সেরা ধনী হতে, আর অনেক কলেজ টপার কে দেখা যাচ্ছে জীবনের ঘানি টানতে গলদগর্ম।
অনেকেই অনেক মতামত দিতে পারেন। তবে, এক্ষেত্রে আমার মত হচ্ছে, ব্যর্থতা হোক আর সফলতা হোক, এটা সম্পূর্ণ রূপে নির্ভর করছে নিয়তির উপরে। এখানে কর্মফল বলে কিছু নেই। আমি অন্ততঃ তাতে বিশ্বাস করিনা। আর এর উপর কারও কোনো হাত নেই। সবাই ভালো থাকবেন।

 

অচেনা প্রতিবিম্ব
হাকিকুর রহমান 
 
একটা ভিন্ন ধারার কড়ানাড়ার
শব্দ শুনতে পেলাম!
ওটাতো হৃদয়ের ঠিক মাঝখানে নাড়া দিলো,
কি যেনো না করা কিছু সমাপ্ত করার
জন্যে তাড়া দিলো-
প্রহরগুলো থেকে প্রায় জোর করেই
কিছু সময় কেড়ে নিলো,
দুয়ারে দাঁড়াতেই
হাতছানি দিয়ে কাছে ডেকে নিলো।
দেখেই যখন ফেলেছে,
কইতে তো আর পারি না
যে, আমি বাড়িতে নেই-
আর আমিও সাড়া না দিয়ে পারিনি
যদিওবা তার অদৃশ্য হাত দু’খানা দিয়ে
কড়া নেড়ে গেছে, নীরবেই।
হ্যা, তার কড়া নাড়ার ধ্বনি
মর্মে মর্মে প্রবেশ করেছে অনায়াসে-
আর তার সে আহবানে
কোন সে চঞ্চলতা দেখি চারপাশে।
আর সেটা উপেক্ষা করার
কোনো ক্ষমতা তো আমার নেই-
তাইতো, পথে নেমেছি
আজিকে তার সাথেই।
এ যেনো,
আমারই কোন এক কালের
অচেনা প্রতিবিম্ব।